হাদিসশাস্ত্রে আমীরুল মুমিনীন ইমাম বুখারী রহ. بخاري bukhari biography
হাদিসশাস্ত্রে আমীরুল মুমিনীন
ইমাম বুখারী রহ.
-------------------------------------
নাম : আবু আবদুল্লাহ মোহাম্মাদ বিন ইসমাইল বিন ইবরাহীম আল-বুখারী
জন্ম : জুমাবার ১৩ শাওয়াল ১৯৪ হিজরী
দশ বছর বয়সে পুরো কোরআন মুখস্থ করেন।
পরিচিত সব কিতাবের অধ্যয়ন শেষ করেন ১৬ বছর বয়সে।
------
বর্ণিত আছে, শৈশবেই তিনি ৭০ হাজার হাদিস পুরোপুরি মুখস্থ করেন।
বাল্যবয়সেই তিনি মহা বিপদে পড়েন দৃষ্টিক্ষমতা হারিয়ে। কিন্তু তাঁর পুণ্যবতী মা দমে না গিয়ে সন্তানের দৃষ্টিক্ষমতা ফিরিয়ে আনতে দিন-রাত আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকেন। অবশেষে একরাতে স্বপ্নে ইবরাহীম আ. তাঁকে সুসংবাদ দেন : ‘হে নারী, অধিক দোয়ার ফলে আল্লাহ তোমার সন্তানের দৃষ্টিক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়েছেন।’ কিশোর বুখারী পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন, আল্লাহ তাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন।
------
* তাঁর অনুপম চরিত্র : বিপুল মুখস্থ শক্তির অধিকারী, বিশ্বস্ত, ধর্মনিষ্ঠ, অল্পেতুষ্ট
* ইমাম বুখারীর উস্তায : ১০০০ -এরও ওপরে। তাদের মধ্যে : আহমদ বিন হাম্বল, ইয়াহইয়া বিন মুঈন, ইসহাক বিন রাহওয়াই, আলী ইবনুল মাদিনী, কোতায়বা বিন সাঈদ, আবু বকর ইবনে আবি শাইবা প্রমুখ।
------
* হাদিস অন্বেষণে তাঁর অভিযাত্রা :
মক্কা ও মদিনায় অবস্থান করেন ছয় বছর। এরপর সেখান থেকে তৎকালীন ইসলামী বিশ্বের প্রায় প্রতিটি জ্ঞানবিখ্যাত ও ঐতিহ্যপূর্ণ নগরীতে ভ্রমণ করেন। সেগুলো যথাক্রমে : বাগদাদ> ওয়াসিত> বাসরা> কূফা> দামেস্ক> কায়সারা> আসকালান> খুরাসান> বালখ> নিশাপুর> মারওয়া> হেরাত> মিসর প্রভৃতি।
------
ইমাম বুখারীর রচিত গ্রন্থের সংখ্যা : ২০
এর মধ্যে :
আল-আদাবুল মুফরাদ
আত-তারীখুল কাবীর
আত-তারীখুস সাগীর
খালকু আফআলিল ইবাদ
রাফউল ইয়াদাইন ফিস-সালাত
আল-কুনা ইত্যাদি।
------
তাঁর রচিত সব থেকে প্রসিদ্ধ গ্রন্থ : ‘আল-জামে আস-সহীহ আল-মুসনাদ মিন হাদিসি রাসূলিল্লাহি সা. ওয়া সুনানিহী ওয়া আইয়ামিহ।’ আলকোরআনের পর সর্বাধিক বিশুদ্ধ কিতাব এটিই।
এ গ্রন্থ রচনার কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে ইমাম বুখারী বলেন, স্বপ্নে নিজেকে আমি আল্লাহর রাসূলের সামনে আবিষ্কার করি। দেখি, আমি তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে। আমার হাতে একটি হাতপাখা, তা দিয়ে আমি তাঁকে সুরক্ষা দিচ্ছি। একজন বিশিষ্ট ব্যাখ্যাকারকে সে বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রাসূলের হাদিসগুলোকে মিথ্যার আগ্রাসন থেকে সুরক্ষা দেবে তুমি!’ এটাই আমাকে বিপুল অনুপ্রাণিত করে ‘আল-জামে আস-সহীহ’ রচনায়।
সমকালীন সব আলেম তাঁর বন্দনা করেছেন। ইমাম মুসলিম রহ. তাঁকে চুম্বন করে বলেছেন, ‘হে উস্তাযদের উস্তায, মুহাদ্দিসদের শিরোমণি, সনদের ত্রুটি বের করার ব্যাপারে হাদিসশাস্ত্রের সুবিজ্ঞ চিকিৎসক, আমাকে আপনার পা-দুটো চুম্বন করতে দিন!’
------
শেষবয়সে তিনি নিপীড়ন ও নির্বাসনের শিকার হন।
নিশাপুরে ফিরে আসার পর স্থানীয় কিছু আলেম গভর্নরের কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। মিথ্যে অপবাদ উত্থাপন করে। অগত্যা তিনি চলে আসেন বুখারায়। বুখারার গভর্নর হাদিস শোনানোর জন্য তাঁকে ডেকে পাঠালে দূতকে তিনি বলে দেন, তাকে গিয়ে বলো, আমি ইলমের মর্যাদাহানি করতে রাজী নই। ক্ষমতাসীনদের দরবারে নিয়ে ইলমকে অপমান করতে প্রস্তুত নই আমি।’ ইমাম বুখারীর এ প্রত্যুত্তর শুনে গভর্নর বুখারা থেকে খরতনক এলাকায় দেশান্তর করেন তাকে। স্বদেশের মায়া ছেড়ে ইলমকে সঙ্গী করে সেখানেই নির্বাসিত জীবনযাপন করতে থাকেন ইমাম বুখারী। ৩১ আগস্ট ৮৬৯ খ্রিস্টাব্দের ২৫৬ হিজরীর ৩০ রমযান সেখানেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
তাঁর রচনা ও জ্ঞান থেকে গোটা বিশ্বমানবতা আজ উপকৃত হচ্ছে। যার প্রতিফল তিনি পেতে থাকবেন কেয়ামত পর্যন্তই।
এবারের ইনফোগ্রাফিকটি সেই মহাপুরুষকে নিয়েই। অরিজিনাল ফাইলটি এখানে :
https://drive.google.com/ open?id=0B5yIu0PQKIDlOWZmYz V4VDFIUVE
ইমাম বুখারী রহ.
-------------------------------------
নাম : আবু আবদুল্লাহ মোহাম্মাদ বিন ইসমাইল বিন ইবরাহীম আল-বুখারী
জন্ম : জুমাবার ১৩ শাওয়াল ১৯৪ হিজরী
দশ বছর বয়সে পুরো কোরআন মুখস্থ করেন।
পরিচিত সব কিতাবের অধ্যয়ন শেষ করেন ১৬ বছর বয়সে।
------
বর্ণিত আছে, শৈশবেই তিনি ৭০ হাজার হাদিস পুরোপুরি মুখস্থ করেন।
বাল্যবয়সেই তিনি মহা বিপদে পড়েন দৃষ্টিক্ষমতা হারিয়ে। কিন্তু তাঁর পুণ্যবতী মা দমে না গিয়ে সন্তানের দৃষ্টিক্ষমতা ফিরিয়ে আনতে দিন-রাত আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকেন। অবশেষে একরাতে স্বপ্নে ইবরাহীম আ. তাঁকে সুসংবাদ দেন : ‘হে নারী, অধিক দোয়ার ফলে আল্লাহ তোমার সন্তানের দৃষ্টিক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়েছেন।’ কিশোর বুখারী পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন, আল্লাহ তাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন।
------
* তাঁর অনুপম চরিত্র : বিপুল মুখস্থ শক্তির অধিকারী, বিশ্বস্ত, ধর্মনিষ্ঠ, অল্পেতুষ্ট
* ইমাম বুখারীর উস্তায : ১০০০ -এরও ওপরে। তাদের মধ্যে : আহমদ বিন হাম্বল, ইয়াহইয়া বিন মুঈন, ইসহাক বিন রাহওয়াই, আলী ইবনুল মাদিনী, কোতায়বা বিন সাঈদ, আবু বকর ইবনে আবি শাইবা প্রমুখ।
------
* হাদিস অন্বেষণে তাঁর অভিযাত্রা :
মক্কা ও মদিনায় অবস্থান করেন ছয় বছর। এরপর সেখান থেকে তৎকালীন ইসলামী বিশ্বের প্রায় প্রতিটি জ্ঞানবিখ্যাত ও ঐতিহ্যপূর্ণ নগরীতে ভ্রমণ করেন। সেগুলো যথাক্রমে : বাগদাদ> ওয়াসিত> বাসরা> কূফা> দামেস্ক> কায়সারা> আসকালান> খুরাসান> বালখ> নিশাপুর> মারওয়া> হেরাত> মিসর প্রভৃতি।
------
ইমাম বুখারীর রচিত গ্রন্থের সংখ্যা : ২০
এর মধ্যে :
আল-আদাবুল মুফরাদ
আত-তারীখুল কাবীর
আত-তারীখুস সাগীর
খালকু আফআলিল ইবাদ
রাফউল ইয়াদাইন ফিস-সালাত
আল-কুনা ইত্যাদি।
------
তাঁর রচিত সব থেকে প্রসিদ্ধ গ্রন্থ : ‘আল-জামে আস-সহীহ আল-মুসনাদ মিন হাদিসি রাসূলিল্লাহি সা. ওয়া সুনানিহী ওয়া আইয়ামিহ।’ আলকোরআনের পর সর্বাধিক বিশুদ্ধ কিতাব এটিই।
এ গ্রন্থ রচনার কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে ইমাম বুখারী বলেন, স্বপ্নে নিজেকে আমি আল্লাহর রাসূলের সামনে আবিষ্কার করি। দেখি, আমি তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে। আমার হাতে একটি হাতপাখা, তা দিয়ে আমি তাঁকে সুরক্ষা দিচ্ছি। একজন বিশিষ্ট ব্যাখ্যাকারকে সে বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রাসূলের হাদিসগুলোকে মিথ্যার আগ্রাসন থেকে সুরক্ষা দেবে তুমি!’ এটাই আমাকে বিপুল অনুপ্রাণিত করে ‘আল-জামে আস-সহীহ’ রচনায়।
সমকালীন সব আলেম তাঁর বন্দনা করেছেন। ইমাম মুসলিম রহ. তাঁকে চুম্বন করে বলেছেন, ‘হে উস্তাযদের উস্তায, মুহাদ্দিসদের শিরোমণি, সনদের ত্রুটি বের করার ব্যাপারে হাদিসশাস্ত্রের সুবিজ্ঞ চিকিৎসক, আমাকে আপনার পা-দুটো চুম্বন করতে দিন!’
------
শেষবয়সে তিনি নিপীড়ন ও নির্বাসনের শিকার হন।
নিশাপুরে ফিরে আসার পর স্থানীয় কিছু আলেম গভর্নরের কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। মিথ্যে অপবাদ উত্থাপন করে। অগত্যা তিনি চলে আসেন বুখারায়। বুখারার গভর্নর হাদিস শোনানোর জন্য তাঁকে ডেকে পাঠালে দূতকে তিনি বলে দেন, তাকে গিয়ে বলো, আমি ইলমের মর্যাদাহানি করতে রাজী নই। ক্ষমতাসীনদের দরবারে নিয়ে ইলমকে অপমান করতে প্রস্তুত নই আমি।’ ইমাম বুখারীর এ প্রত্যুত্তর শুনে গভর্নর বুখারা থেকে খরতনক এলাকায় দেশান্তর করেন তাকে। স্বদেশের মায়া ছেড়ে ইলমকে সঙ্গী করে সেখানেই নির্বাসিত জীবনযাপন করতে থাকেন ইমাম বুখারী। ৩১ আগস্ট ৮৬৯ খ্রিস্টাব্দের ২৫৬ হিজরীর ৩০ রমযান সেখানেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
তাঁর রচনা ও জ্ঞান থেকে গোটা বিশ্বমানবতা আজ উপকৃত হচ্ছে। যার প্রতিফল তিনি পেতে থাকবেন কেয়ামত পর্যন্তই।
এবারের ইনফোগ্রাফিকটি সেই মহাপুরুষকে নিয়েই। অরিজিনাল ফাইলটি এখানে :
https://drive.google.com/
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন