গণতন্ত্র বনাম ইসলাম

গণতন্ত্র বনাম ইসলাম
....
জীবনের
প্রতিটি ধাপে ধাপে এদুটি ভিন্ন
ধর্মের সংঘাত
অনস্বীকার্য,অনিবার্য। দুঃখ্জনক

বাস্তবতা,প্রতিটি সংঘাতেই গণতন্ত্র
বিজয়ী। এখন গণতন্ত্রই প্রশাসক,
ইসলাম শাসিত। গণতন্ত্র ইসলামের
যেটুকুর বৈধতা দেয়, শুধু
সেটুকুই পালনীয়।
বাকিটা পরিত্যাজ্য! গণতণ্ত্র
আমাদেরকে নামাজ
রোজার অনুমতি দেয়,
আমরা তা পালন করি। গণতন্ত্র
জিহাদকে হারাম করে,তাই আমরা ও নির্দ্বিধায় তা বর্জন করি। গণতন্ত্র সুদকে হালাল করে,ইচ্ছায় অনিচ্ছায় আমরাও তাতে অংশ নিই । গণতন্ত্র
বাল্য বিবাহকে হারাম করে,
আমরাও তা হারাম মানি।মদের অনুমোদন থেকে নিয়ে পতিতাবৃত্তির লাইসেন্স পর্যন্ত
বিজয়ী গণতন্ত্রের এমন অসংখ্য
উদাহরণ আজ আমাদের
সামনে সুস্পষ্ট। দিনের পর দিন
গণতন্ত্র ইসলামের হালালকে হারাম
এবং হারামকে হালাল করে চলছে।রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে ধর্মকে ঝেড়ে বিদায়ের আয়োজন প্রায় চূড়ান্ত।
অথচ আমরা......?
শুধুই দলাদলি আর গালাগালিতে লিপ্ত।এ থেকে উত্তরণের পথ নেই।সে পথের সন্ধানে সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য নেই,কর্মসূচী নেই,নেই যোগ্য নেতৃত্ব ও দক্ষ কর্মীবাহিনী তৈরীর সুনির্দিষ্ট কোন কর্ম পরিকল্পনা।আছে শুধু সমালোচনা আর গীবত শেকায়েত।নির্দিষ্ট বলয়ে আবদ্ধ থেকেই অন্যদের নোংরা আক্রমণের নিচু মানসিকতা।
মনে রাখবেন,এই অমার্জনীয় নির্লিপ্ততার দায়ে একদিন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে আপনাকে দাঁড়াতেই হবে!

গণতন্ত্র বনাম ইসলাম(২)
...................................
পরিচয়:গণ- অর্থ মানুষ, মানব বা জনগণ
আর তন্ত্র-অর্থ সাধন প্রণালি, প্রধান শাস্ত্রবিশেষ,আইন,নিয়ম
কানুন ইত্যাদি ।এ হিসেবে সহজ ভাষায় গণতন্ত্রের অর্থ দাঁড়ায়-
"মানব কল্যান
সাধনে মানবের তৈরি আইন বা পদ্ধতি,
যে পদ্ধতি প্রয়োগ হয় শুধু মানব সমাজ বা রাষ্ট্র
ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য, আর এটাই হল গনতন্ত্র
। এটা এমন
একটি পদ্ধতি যেখানে আল্লাহ্ বা ধর্মীয়
আইন প্রয়োগের কোন স্থান নেই । এই শ্বাসন
ব্যবস্থায় শুধুমাত্র মানবের জন্য
মানব আইন
প্রয়োগের মাধ্যমে মানব কল্যাণ সাধন করার প্রয়াস চালানো হয়ে থাকে ।
যদি ধর্মীয় বা আল্লাহর আইন চালু
বা প্রয়োগ করা হয় তবে তা আর গণতন্ত্র থাকেনা ।
পূর্ণাঙ্গভাবে গণতন্ত্রের
পদ্ধতি খুজতে গেলে আমরা পাব -
গণতন্ত্র
হচ্ছে সামাজিক, অর্থনৈতিক
এবং সাংস্কৃতিক
স্বাধীনতা ও চর্চা । এটি গ্রীক শব্দ
demokratia অর্থাৎ "rule of
the
people" থেকে এসেছে , যার শাব্দিক
অর্থ
“demos = people “ and “
kratos =
power” অর্থাৎ জনতার
পদ্ধতি বা শক্তি ।
এটি বর্তমানে খুব আধুনিক ও জনপ্রিয়
পদ্ধতি হলেও
এর জন্ম প্রাচীন ৫ম থেকে ৪র্থ
খ্রী:পূ:
শতাব্দিতে ।
এবার আমরা যদি গণতন্ত্র নিয়ে কিঞ্চিত আলোকপাত করি-
*আল-কোরআন ও গণতান্ত্রিক সংবিধানের মধ্যকার ফারাক*
আল-কুরআন----“যাবতীয়
ক্ষমতা শুধুমাত্র
আল্লাহরই জন্য।” (আল কুর'আন
২-১৬৫)
গনতন্ত্র- জনগনই সকল ক্ষমতার
উৎস।
আল-কুরআন-- “আল্লাহ ছাড়া কারও
বিধান দেবার
ক্ষমতা নেই।” ( আল কুর'আন
১২-৪০)
গনতন্ত্র- আইন প্রণয়নের
ক্ষমতা জনগন, সংসদ,
মন্ত্রী-এমপির (মদ, পতিতালয় বৈধও
হতে পারে) ।
আল-কুরআন-- আল্লাহ
তাআলা সার্বভৌমত্বের
মালিক। ( আল কুর'আন ৩-২৬)
গনতন্ত্র-- সার্বভৌমত্বের মালিক
জনগন।
আল-কুরআন-- “(হে নবী)
আপনি যদি অধিকাংশের
রায়কে মেনে নেন তাহলে তারা দ্বীন
থেকে বিচ্যুত
করে ছাড়বে। ( আল কুর'আন ৬-১১৬)
গনতন্ত্র- অধিকাংশের রায়ই চুড়ান্ত
সিদ্ধান্ত।
আল-কুরআন- “আল্লা’হ
তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ
করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন।
” ( আল কুর'আন
২-২৭৫)
গনতন্ত্র- গণতন্ত্র সূদভিত্তিক
অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করে।
আল-কুরআন- ব্যভিচার শাস্তিযোগ্য
অপরাধ। ( আল
কুর'আন ২৪-২)
গনতন্ত্র- সংসদ পতিতালয়ের (যিনা)
লাইসেন্স দেয়।
আল-কুরআন- সৎকর্ম ও আল্লাহ্
ভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ

সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের
সহায়তা করো না।
( আল কুর'আন ৫-২)
গনতন্ত্র- অধিকাংশ
ক্ষেত্রে প্রার্থী নিজের সুনাম
ও প্রতিদ্বন্দ্বীর কুৎসা রটায়।
আল-কুরআন- মদ, জুয়া,
লটারী নিষিদ্ধ। ( আল
কুর'আন ৫-৯০)
গনতন্ত্র-- মদ এর লাইসেন্স দেয়।
জুয়া, লটারী বৈধ।
আল-কুরআন- “হে মুমিণগণ!
তোমরা ইহুদী ও
খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ
করো না।
তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের
মধ্যে যে তাদের
সাথে বন্ধুত্ব করবে, সেতাদেরই
অন্তর্ভুক্ত।
আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন
করেন না। ( আল
কুর'আন ৫-৫১)
গনতন্ত্র- কোন সমস্যা নাই। যার
সাথে ইচ্ছা (আমেরিকা, ইসরাইল)
বন্ধুত্ব কর।
এখন সিদ্ধান্ত আপনার-
প্রচলিত গনতন্ত্রে থেকেই নামাজ রোজা যেট্টুক পালন করা সম্ভব,তাতেই সন্তুষ্ট থাকবেন?না,পূর্ণাঙ্গ ইসলাম প্রতিষ্ঠায় আজ এখন থেকেই আত্মনিয়োগ করবেন??

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নফস, রুহ, কলব......পরিচয়, ব্যাধি, প্রতিকার

চৌদ্দশ বছরের আমরা এক কাফেলা

হাদিস ছাড়া শুধু কুরআন অনুসরণ কতটুকু যৌক্তিক